নান্দনিক শিল্প

আমাদের আজকের আলোচনার বিষয় নান্দনিক শিল্প ,যা শিল্পকলা অধ্যায় এর অন্তর্ভুক্ত।

নান্দনিক শিল্প

এই পাঠে আমরা নান্দনিক শিল্প বা চারুশিল্পের অন্তর্গত চিত্রকলা, ভাস্কর্য ও খোদাইশিল্প সম্পর্কে সংক্ষেপে জানব।

পূর্বের পাঠে আমরা চারুকলা সম্পর্কে জেনেছি। নান্দনিক-শিল্প আসলে চারুশিল্পেরই অন্য নাম। চারুশিল্প আমাদের মনকে আনন্দ দেয়, দৃষ্টিকে আনন্দ দেয়। যে শিল্প আনন্দদায়ক ও দৃষ্টিনন্দন, যা আমাদের মনের খোরাক যোগায় তাকেই আমরা নান্দনিক-শিল্প বলতে পারি।

নন্দন শব্দ থেকে নান্দনিক শব্দের উৎপত্তি। মর্গের উদ্যানকে বলা হয় নন্দনকানন। নন্দন শব্দটি সুন্দর অর্থে ব্যবহৃত হয়। শিল্পী যখন কোনোকিছু সৃষ্টি করেন তখন তাঁর সৃষ্টির সাথে মিশে থাকে শিল্পীর ব্যক্তিগত জীবনের নানা অভিজ্ঞতা, তাঁর রুচি, চিন্তা-চেতনা, শিল্পবোধ, তাঁর পরিবেশ ও সমাজ ইত্যাদি নানা কিছু।

 

নান্দনিক শিল্প

 

শিল্পী তাঁর আবেগ, আনন্দ, দুঃখ, ক্ষোভ এসব অনুভূতিকেই শিল্পরূপ দেন। দুঃখ-বেদনা থেকেও শিল্পসৃষ্টি হতে পারে। তবে ভাতে মিশে থাকে সৃষ্টির আনন্দ। দুঃখকে শিল্পে প্রকাশ করার আনন্দ। এসব শিল্পসৃষ্টির মূলে থাকে শিল্পীর নিজেকে প্রকাশ করার অদম্য ইচ্ছা।

শিল্পী চান দর্শক তাঁর শিল্পকর্ম দেখে আনন্দ পাক, শিল্পীর চিন্তাভাবনার সাথে দর্শক নিজের চিন্তার মিল খুঁজে পাক অথবা তাঁর দৃষ্টিভঙ্গি দর্শকের হৃদয়কে আলোড়িত করুক। দর্শক তাতে চিন্তার কিছু খোরাক পাক। শিল্পী নিজেকে প্রকাশ করার জন্য যে-কোনো মাধ্যম বেছে নিতে পারেন। সেটা হতে পারে চিত্রকলা, ভাস্কর্য বা অন্য কোনো মাধ্যম।

চিত্রকলার মতো ভাস্কর্য, কাঠখোদাই বা রিলিফ ওয়ার্ক-এর মাধ্যমেও নান্দনিক-শিল্প হতে পারে। মাধ্যম যা-ই হোক এ ধরনের শিল্পকে আমরা নান্দনিক শিল্প বলতে পারি। যেমন শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিনের আঁকা ছবি- ‘সংগ্রাম’।

 

 

এই ছবিটি শ্রমজীবী মানুষের জীবনসংগ্রামকে তুলে ধরেছে। চিত্রকলার মাধ্যমে যেমন নান্দনিক-শিল্প হয় তেমনি ভাস্কর্যের মাধ্যমেও হতে পারে।

আমাদের দেশে ও বিদেশে প্রচুর ভাস্কর্য রয়েছে যা কোনো বিষয়কে নিয়ে শিল্পীর মনের অনুভূতিকে মানুষের মাঝে তুলে ধরেছে। যেমন- ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কলাভবনের সামনে অবস্থিত ‘অপরাজেয় বাংলা’। এই ভাস্কর্যটি আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধের গৌরবগাঁথা, মুক্তিযোদ্ধাদের বীরত্ব,

 

নান্দনিক শিল্প

 

যুদ্ধে নারীর অংশগ্রহণসহ মুক্তিযুদ্ধের অনুভূতিকে প্রকাশ করেছে। একইভাবে কাঠখোদাই বা ৱিলিক করা কাজের মাধ্যমেও হতে পারে নান্দনিক-শিল্প।

কাজ :

১. চিত্রকলা ও ভাস্কর্যের মাধ্যমে নান্দনিক-শিল্প তৈরি করা স, এ-বিষয়ে তোমার মতামত তুলে ধর।

২. যে কোনো চিত্রকলা বা কে কি আমরা নান্দনিক শিল্প বলব? তোমার মতামত দাও ।

 

আরও দেখুনঃ

Leave a Comment