Site icon Drawing Gurukul [ ড্রয়িং গুরুকুল ] GOLN

জীবনযাপনে চারু ও কারুকলা

জীবনযাপনে চারু ও কারুকলা

আমাদের আজকের আলোচনার বিষয় জীবনযাপনে চারু ও কারুকলা ,যা বাংলাদেশের প্রাচীন শিল্পকলা ও ঐতিহ্যের পরিচয় অধ্যায় এর অন্তর্ভুক্ত।

জীবনযাপনে চারু ও কারুকলা

আদিকাল থেকেই চারু ও কারুকলার উপর নির্ভর করে জীবনযাপন করে আসছে বহু মানুষ। পেশা হিসেবেই তারা শিল্পকর্মকে বেছে নিয়েছে। আমাদের লোকশিল্পীরা ও কারুকাজের শিল্পীরা তাদের তৈরি শিল্পকর্ম বিক্রি করে সেই অর্থ দিয়েই জীবনযাপনের প্রয়োজন মিটিয়ে নিচ্ছে।

 

 

যেমন শখের জিনিস পোড়ামাটির পুতুল, শখের হাঁড়ি, কাঠের নকশা ও ছবিবহুল পুতুল, হাতি, ঘোড়া, গ্রামের মেয়েদের নকশিকাঁথা ইত্যাদি অনেক আগে থেকেই মানুষ অর্থের বিনিময়ে সংগ্রহ করে আসছে। পাটের তৈরি শিকা, নানারকম ব্যাগও পাট দিয়ে তৈরি হচ্ছে, টেবিলম্যাটসহ বহু ব্যবহারের জিনিসপত্র যা বাণিজ্যিকভাবেও সফল।

কুমারদের তৈরি হাঁড়ি-পাতিল, কলসি ছাড়াও মাটি দিয়ে বর্তমানে বহু কারুশিল্প তৈরি হচ্ছে। যেমন- ছোট-বড় নানা আকৃতির ফুলদানি, মাটির ভাস্কর্য, মাটির গয়না ইত্যাদি। কাঠ, বাঁশ ও বেতের কারুশিল্প নানারকম আসবাবপত্র তৈরিতে, সংগীতচর্চার যন্ত্র তৈরিতে, ছবি ও নকশা ফুটিয়ে তোলার জন্য বহু চারু ও কারুশিল্পী কাজ করে চলেছে।

 

 

বাংলাদেশের তাঁতের শাড়ি রং, নকশা ও ছবির জন্য দেশে-বিদেশে বিখ্যাত। জামদানির বাহারি নকশা, রঙিন সুতার বুনটের মাধ্যমে দক্ষ কারুশিল্পীরাই করে থাকেন। নকশাদার তাঁতের শাড়ির কদর শুধু দেশেই নয়, বিশ্বের বহু দেশের মানুষ আগ্রহসহকারে তা সংগ্রহ করে।

যেমন- জামদানি, ঢাকাই বিটি, টাঙ্গাইল শাড়ি এবং আদিবাসীদের তাঁতে তৈরি নকশাদার রঙিন পোশাক। বাংলাদেশে বর্তমানে অনেকগুলো চারুকলা ও কারুশিল্প শিক্ষার প্রতিষ্ঠান রয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে যুক্ত যেমন রয়েছে তেমনি বেসরকারি পর্যায়েও রয়েছে। এসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে প্রতিবছর প্রায় চারশতাধিক চিত্রশিল্পী উত্তীর্ণ হয়।

বিভিন্ন সংস্থায় নিজেদের চারু ও কারুশিল্পের অবদান রাখতে তাঁরা সমর্থ হয়। যেমন বিজ্ঞাপনী সংস্থায়, বই-পুস্তকের ছবি আঁকায়, খবরের কাগজে, সিনেমাশিল্পে, টেলিভিশনের সেট নির্মাণ থেকে শুরু করে বিভিন্ন শিল্পকর্মে, পোশাকশিল্পে, ওষুধশিল্প ও বিভিন্ন কলকারখানায়, ইনটেরিয়র ডিজাইনসহ বহু স্থাপনাশিল্প সুন্দর ও সুচারুভাবে সম্পন্ন করে চলেছে এদেশের চারু ও কারুশিল্পীরা।

 

 

ছবি এঁকে, প্রদর্শনী করে, ভাস্কর্যশিল্প তৈরি করেও চিত্রশিল্পীরা উপার্জন করে থাকেন। চিত্রপ্রদর্শনীতে আজকাল অনেক শিল্পীর ছবি বিক্রি হয়। বাঁশ, বেত, পাথর, মাটি ইত্যাদি মাধ্যমে নান্দনিক শিল্পকর্ম ও কারুশিল্প অনেক শিল্পবোদ্ধা ক্রয় করে সংগ্রহ করেন এবং তাঁদের ঘরবাড়ি সাজান।

তাই শুধু জীবনযাপনের প্রয়োজনেই চিত্রশিল্পীরা কাজ করছেন না, একই সঙ্গে সুন্দর ও রুচিশীল জীবনযাপনের জন্য, সংস্কৃতিসমৃদ্ধ সমাজগঠনে, সর্বোপরি দেশের উন্নতির ক্ষেত্রে চারু ও কারুশিল্পীরা বিশেষ অবদান রাখতে সমর্থ।

কাজ : প্রাত্যহিক জীবনে চারু ও কারুকলার ব্যবহারিক ক্ষেত্র নিয়ে মাইন্ডম্যাপ তৈরি কর ।

আরও দেখুনঃ

Exit mobile version