আমাদের আজকের আলোচনার বিষয় কারুশিল্প ,যা শিল্পকলা অধ্যায় এর অন্তর্ভুক্ত।
কারুশিল্প
ইতঃপূর্বে আমরা চারুশিল্প ও কারু-শিল্পের পার্থক্য সম্পর্কে জেনেছি। ব্যবহারিক কতৃতে সৌন্দর্য আরোপ করার মধ্য দিয়ে কারু-শিল্পের সূচনা, আমরা ভাও জেনেছি। সকল ব্যবহারিক কড়ুই কারু-শিল্প নয়।
শুধুমাত্র যেসকল ব্যবহার্য সামগ্রী শিল্পগুণসম্পন্ন অর্থাৎ যা কারুকার্যখচিত অথবা নির্মাণশৈলীর কারণেই মনোমুগ্ধকর তাকেই আমরা কারু-শিল্প বলতে পারি। জীবনের প্রয়োজনে মানুষ যা সৃষ্টি করে তার প্রাথমিক রূপটি হয় খুব সরল।
যেমন আমরা যদি আদিমকালের বিভিন্ন হাতিয়ার বা বাসনপত্রের ছবি দেখি, দেখা যাবে সেগুলো খুব সহজ ও সরলভাবে তৈরি। কেবল ব্যবহারিক প্রয়োজনের কারণেই সেটা তৈরি হয়েছে।
কিন্তু পরবর্তীকালে সৌন্দর্যবোধ ও রুচিবোধের প্রয়োজনে সে সকল হাতিয়ার বা বাসনপত্রই মানুষ অনেক সুন্দর ও মনোমুগ্ধকরভাবে তৈরি করে তাকে শিল্পরূপ দিয়েছে। তখনই সেটা হয়েছে কারুশিল্প।
মানুষ তার জীবনযাপনকে সুন্দর করার জন্য, সুখে ও আনন্দে বসবাস করার জন্য শিল্পকর্মকে নানাভাবে ব্যবহার করে। গ্রামের সাধারণ গরিব কৃষক বা শ্রমিক তাঁর কুড়েঘরটি বাশ,খড় এবং ছন দিয়ে যথাসম্ভম সুন্দর করে তৈরি করার চেষ্টা করে।
দরজা, জানালার বাঁশ ও বেতের বাধন দিয়ে নানারকম নকশা করার চেষ্টা করে। এর কারণ সব মানুষের মনেই সৌন্দর্যবোধ থাকে। আর সে তার জীবনযাপনে ঐ সৌন্দর্যবোধের প্রয়োগ করতে চায়। আবার গাঁয়ে যারা অর্থশালী, তাদের বাড়িঘর পরিপাটি করে সাজানো থাকে।
কাঠের দরজা, জানালায় থাকে কাঠ খোদাই করা, উঁচু উঁচু হয়ে থাকা নানারকম নকশা, ফুল, পাখি ও লতাপাতার ছবি। তাদের বাড়িতে ব্যবহৃত খাট, পালং, চেয়ার, টেবিল, নানারকম আসবাবপত্র, বেত ও বাঁশের তৈরি বিভিন্ন সামগ্রীতে নানারকম কারুকাজ করে সেগুলোকে সৌন্দর্যমণ্ডিত করা হয়।
শহরের মধ্যবিত্ত বা উচ্চবিত্তরাও কারু-শিল্পকে নানাভাবে ব্যবহার করেন তাঁদের জীবনযাপনে। আমাদের দৈনন্দিন জীবনে ব্যবহৃত বিভিন্ন সামগ্রীর প্রায় সবই কারুশিল্পের অন্তর্ভুক্ত। সুতরাং দেখা যাচ্ছে, কারু-শিল্প আমাদের সবার জীবনের সাথে ওতপ্রোতভাবে মিশে আছে।
কাজ : তোমার বাসায় বা বাড়িতে ব্যবহৃত হয় এরকম ৫টি কারুশিল্পের নাম লেখ ।